মালদহ নিউজ ডেস্ক: মালদহে লকডাউনের কারণে প্যাকেজিং বাক্স তৈরির কারখানা গুলি বন্ধ থাকায় এবছর আম রপ্তানিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এনিয়ে আম রপ্তনিকারক মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই মু্হুর্তে প্যাকেজিং বাক্স তৈরি না হলে মুরশুমের শুরুতেই মালদহের বিখ্যাত ফল রপ্তানিতে ধাক্কা খেতে পারে। এতে আম ব্যাসায় প্রচুর ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আম ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আম রপ্তানিতে কাঠের বাক্স উপযোগী। জেলায় প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ আম রপ্তানি কাঠের বাক্সে হয়। এর সুবিধা হল বড় বড় ট্রাক লরিতে বেশি করে আম রপ্তানি করা । এছাড়াও অন্যান্য প্যাকেজিং এর ক্ষেত্রে ট্রান্সপোর্টে অগোছালোভাবে আম রপ্তনি হয়। এতে বাণিজ্যিকভাবে আম রপ্তানিতে পরিবহন খরচ বেড়ে যায়। যে কারণে আম ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়।

কাঠের প্যাকেজিং বাক্সে আম রপ্তানি করলে ট্রাক বা লরিতে সু্সজ্জিতভাবে আম পরিবহণ করা যায়। এতে আমের গুনমানও ভালো থাকে। এজন্য আম রপ্তানিতে অনেকেই কাঠের বাক্সের ওপর নির্ভরশীল। কিছু ক্ষেত্রে বাঁশের ঝুরি ব্যবহার হয়। তবে কাঠের বাক্সের উপর অনেকেই নির্ভরশীল হওয়ায় জেলার সর্বত্রই ছোট-বড় ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে উঠেছে। জেলার একমাত্র ফল রপ্তানির জন্য প্রতি বছর আগে থেকেই বাক্স তৈরির কাজ শুরু হয়। করোনা ভাইরাসের আবহে লকডাউনের কারণে এবছর আম প্যাকেজিং বাক্স তৈরি ব্যাপক অর্থে শুরু হয়নি। তবে কিছু কিছু এলাকায় হালকাভাবে একাজ শুরু হয়েছে। আম উৎপাদক মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, মে মাসের শেষের দিকেই আম রপ্তানি নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়ে যাবে ।সে ক্ষেত্রে প্যাকেজিং বাক্সের জোগান প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে পারে। জেলার আম উৎপাদক মহল সেই আশঙ্কায় প্রকাশ করছেন । ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোগীরা জানিয়েছেন, প্রতিবছর আমের মুকুল চলে আসার পর থেকেই কাঠের বাক্স তৈরীর কাজ শুরু হয়ে যায় । মালদহের অমৃতি , মিল্কি , বাবলা,রতুয়া,কালিয়াচক সহ বিভিন্ন এলাকায় কাঠের বাক্স তৈরির কারখানা রয়েছে। প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক এ সময় আমের প্যাকেজিং ব্যাবসার সাথে যুক্ত থাকে। কিন্তু করোনার আবহে আম প্যাকেজিং এর বাক্স তৈরির প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে আমের মরশুম আসছে ।

জমাইষষ্ঠীর বাজার থেকে কমবেশ আম রপ্তানী হয় । কিন্তু আমের সাথে যুক্ত ক্ষুদ্র শিল্প গুলি এখনও সেঅর্থে চালু না হওয়ায় আম রপ্তানিতে প্যাকেজিং বাক্সের যোগান দিতে হিমশিম খেতে হবে । এই পর্যায়ে দাঁড়িয়ে প্রশাসনের কাছে প্যাকেজিং কারখানা গুলি সম্পর্নরূপে খুলে দেওয়ার জন্য আম উৎপাদক মহল আর্জি জানাবেন বলে দাবি করেছেন । মালদহ ম্যাংগো মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জল সাহা বলেন, আম রপ্তনির জন্য পাতলা কাঠের তৈরি প্যাকেজিং বাক্স প্রয়োজন হয় । কিন্তু লকডাউনের কারণে কাঠের বাক্স তৈরীর কাজ ব্যাহত হচ্ছে। কেননা প্রায় ৮০ শতাংশ আম রপ্তানি কাঠের বাক্স হয়ে থাকে। এ পরিস্থিতিতে কাঠের বাক্স তৈরি না হয় তাহলে রপ্তনিতে সমস্যা দাঁড়াবে । তাছাড়া যারা এই পেশার সাথে যুক্ত তারাও লোকসানে পড়বেন। আমরা প্রশাসনের কাছে আম সম্পর্কিত সমস্ত নন এসেনসিয়াল কারখানাগুলি খুলে দেওয়ার জন্য আরজি জানিয়েছি। মালদাহ স ও প্লাই মিল অনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত বসু জানিয়েছেন, লকডাউনের কারণে কাঠের বাক্স তৈরি করা সম্ভব হয়নি । — প্রেস এজেন্সি ।